সর্বশেষঃ
সাবেক ১২ মন্ত্রীসহ ১৪ জনকে আজ হাজির করা হচ্ছে ট্রাইব্যুনালে দীপু মনির সুপারিশে মাউশিতে তিন হাজার পদায়ন শিক্ষা ভবনের সামনে ৭ কলেজ ছাত্রের বিক্ষোভ এবং সড়কে পুলিশ ব্যারিকেড ২০২৫ সালে হজে নিবন্ধন শেষ হয়েছে ৪৩,৩৭৪ জনের প্রতিটি চার নারীর মধ্যে তিনজনই সহিংসতার শিকার: স্বাস্থ্য ও সামাজিক জরিপ ঢাকার সাবেক চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম সাময়িক বরখাস্ত শীতের আগমনী বার্তা: আবহাওয়া অফিসের শৈত্যপ্রবাহের আগাম সতর্কতা নির্বাচনে মাঠ প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মির্জা ফখরুল বলছেন, এ দেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি গ্রহণ করবে না সচেতনতা ও টিকাদানেই টাইফয়েড নিয়ন্ত্রণ সম্ভব: নূরজাহান বেগম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: আমার ছেলে-মেয়েরা দেশে, আমি কি ভাবে নিরাপদ থাকব? প্রধান উপদেষ্টা রোমের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করলেন
সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ৮.৩৬ শতাংশে বৃদ্ধি

সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ৮.৩৬ শতাংশে বৃদ্ধি

সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়ে ৮.৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। পূর্বের মাস আগস্টে এ হার ছিল ৮.২৯ শতাংশ। এ মাসে দেশের খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত দুটি খাতের পণ্যের দাম বেড়েছে, ভাষ্য অনুযায়ী সাধারণ ক্রেতাদের জন্য এটি একটি উদ্বেগজনক বিষয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি এবং সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পরও মূল্যস্ফীতি আবার বেড়ে যাওয়াটা বাস্তব হতাশাজনক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সোমবার প্রকাশিত মাসিক ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) এর রিপোর্টের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।

সিপিআই-য়ের বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে দেশের গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৩৬ শতাংশে। এর মানে, যদি গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে একটি পণ্য ১০০ টাকায় কেনা যেত, তবে এই সেপ্টেম্বরে সেই একই পণ্য কিনতে এখন প্রয়োজন ১০৮ টাকা ৩৬ পয়সা। অর্থাৎ, সাধারণ পণ্যের দাম আগের তুলনায় বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতি মূলত একধরনের করের মতো, যা পরিবার চালানোর ব্যয় ভুলিয়ে দেয়। ধরা যাক, মাসে সাধারণ আয় দিয়ে সংসার চালাতে হয়, আর হঠাৎ করে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেলে বা আয়ের সাথে সামঞ্জস্য না থাকলে মানুষকে ধারদেনা করে খেতে হয় অথবা ব্যয় কমাতে হয়। এতে করে পরিবারের আর্থিক চাপ বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে, যদি মজুরি বা আয়ের বৃদ্ধি কম হয়, তবে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান আরও খারাপ হয় এবং প্রকৃত আয়ের পরিমাণ কমে যায়।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, গেলো অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের বেশি, যা বিপরীতে সরকারের লক্ষ্য ছিল ৬.৫ শতাংশের মধ্যে রাখা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে এই লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে, চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত ছিল, তেমনভাবে তা অর্জিত হচ্ছে না কারণ মূল্যস্ফীতি এখনও লক্ষ্যমাত্রার ওপরে অবস্থান করছে।

তদন্তে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৭.৬৪ শতাংশে পৌঁছেছে, যা আগস্টে ছিল ৭.৬ শতাংশ। পাশাপাশি, খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮.৯৮ শতাংশ। এর ফলে, সাধারণ জীবনযাত্রার ব্যয় আরও বেড়ে গেছে।

নানা পদক্ষেপের পরও দেশের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়ার আর সব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখন সবচেয়ে বেশি। ভারতের মূল্যস্ফীতি ২.০৭ শতাংশ, পাকিস্তানে ৫.৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ১.৫ শতাংশ, নেপালে ১.৬৮ শতাংশ, আফগানিস্তানে ২.২ শতাংশ, মালদ্বীপে ৪.৬ শতাংশ এবং ভূটানে ৩.৬ শতাংশ।

এ মাসে শহরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি। গ্রামে গড়ে মূল্যস্ফীতি ৮.৪৭ শতাংশ, যেখানে শহরে তার হার ৮.২৮ শতাংশে নেমেছে। বিশ্ব ব্যাংক ও এডিবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট মূল্যস্ফীতি প্রত্যাশা অনুযায়ী ৮ শতাংশের নিচে নামবে, তবে সেটি দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ হার হবে।

অবশ্য, দক্ষিণ এশীয় অর্থনীতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। তবে, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মতো দেশে খাদ্য ও জ্বালানি খাতে মূল্যস্ফীতি এখনও বড় চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। অন্যদিকে, ভারত ও শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা দেখায়, কঠোর মুদ্রানীতি, কার্যকর বাজার তদারকি এবং উৎপাদন বাড়ানোর নীতির মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY Shipon tech bd